বর্তমান সময়ে খুবই পরিচিত একটি ফল হলো লটকন। পরিচিত এ ফলটি অনেকেই খেতে খুবই পচ্ছন্দ করেন। এ ফল খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এ ফলের কিছু স্বাস্থ উপকারিতা রয়েছে যা আমরা আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করবো।
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ার মাধ্যমে জেনে যাবেন লটকনের বিচি খেলে কি হয়, লটকনের উপকারিতা, লটকন ফলের অপকারিতা, লটকন কিভাবে খায়, গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা, গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়া যাবে কি, পুরুষ লটকন গাছ চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।
লটকনের বিচি খেলে কি হয়
লটকন হলো টক মিষ্টি স্বাদের রসালো একটি ফল। এ ফল শরীরের জন্য অনেক উপকারি। পুুষ্টিবীদদের মতে মৌসুমি ফলগুলো আমাদের খাদ্য তালিকায় সবসময় রাখা উচিত। এজন্য বেছে নিতে পারেন লটকন। লটকন মৌসুমি একটি ফল, যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরন করে থাকে। লটকন আমাদের স্বাস্থের জন্য উপকারি হলেও লটকনের বিচি খেলে কি হয় তা আমাদের অনেকের জানা নেয়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকনের বিচি খেলে কি হয়।
লটকন পুষ্টিকর ফল হলেও এর বিচির মধ্যে কোনো ধরনের পুষ্টি নেয়। আমাদের মধ্যে অনেকেই ভেবে থাকেন যে সব ফলের বিচি স্বাস্থের জন্য উপকারি। তবে বেশিরভাগ ফলের বিচিতে পুষ্টি থাকলেও, এ বিচি খাদ্য হিসেবে খাওয়া ঠিক নয়। এর স্বাদও ভালো না অপরদিকে এটি খেলে শরীরে অস্বস্তি ভাব আসে। ফল খাওয়ার সময় একেক বার বিচি যদি পেটে চলে যায় তাতে কোনো সমস্যা নেয়। তবে ইচ্ছা করে এর বিচি অতিরিক্ত খেলে হজমে সমস্যাসহ পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই লটকন ফলের বিচি এড়িয়ে চলায় ভালো।
এ বীজ খাদ্য হিসেবে আমরা খেতে না পারলেও, এ বীজ বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশেষ করে গনোরিয়া রোগের জন্য।
লটকন ফলের উপকারিতা
প্রকৃতির মাঝে গড়ে ওঠা গাছে ঝুলন্ত এ ফলগুলো দেখতে হলুদ বর্নের ছোট্ট আকারের একটি ফল। এ ফল দেখতে যেমন চমৎকার তেমনি খেতেও অসাধারন। বর্ষাকালে এ ফল পাওয়া যায়। আষাঢ় ও শ্রাবন মাসে এ ফল পরিপক্ক হয়ে থাকে। সুস্বাদু এ ফলের মধ্যেও রয়েছে স্বাস্থের জন্য উপকারি বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান। পুষ্টিবীদরা জানিয়েছেন, লটকন ফলের মধ্যে স্বাস্থের জন্য ক্ষতি করে এমন কোনো পুষ্টি উপাদান নেয়। বড় থেকে শুরু করে ছোটরাও এ ফল খেতে পারেন। লটকন ফলের মধ্যে স্বাস্থের জন্য উপকারি বিভিন্ন খনিজ উপাদান ও ভিটামিন রয়েছে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকন ফলের উপকারিতা সম্পর্কে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে: লটকন ফলের মধ্যে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে। যা খাওয়ার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে থাকে।
দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ ভালো থাকে: লটকনের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি’। আর ভিটামিন সি’ থাকার ফলে মানবশরীরের সহজেই ভিটামিন সি’ এর চাহিদা পূরন হয় এবং দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থকে ভালো রাখে।
শরীরে শক্তির জোগান দেয়: লটকনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি রয়েছে। এ ফলের ক্যালোরির পরিমাণ ৯২। তাই এ ফল খেলে শরীরে সহজেই শক্তি আসে এবং দুর্বলতা দূর হয়।
বেরি বেরি রোগ থেকে মুক্তি দেয়: লটকন ফল থেকে ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-২ পাওয়া যায়। যার কারনে নিয়মিত এ ফল খেলে বেরি বেরি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়: লটকনের মধ্য থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে পটাশিয়াম পাওয়া যায়। যা ¯œায়ুর দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করে থাকে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: লটকনের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদানগুলো ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে: লটকন থেকে পাওয়া যায় অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম। যা মানবদেহকে বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
ডিহাইড্রেশনকে দূরে রাখে: লটকনে জলীয় অংশের পরিমান বেশি রয়েছে। যা ডিহাইড্রেশন দূর করতে সহায়তা করে থাকে।
হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়: লটকন ফলের মধ্যে থাকা পটাশিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
চর্মোরোগ প্রতিরোধ করে: বর্ষাকালে চর্মোরোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। আর এ ঝুঁকি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে লটকন। পাশাপাশি বর্ষাকালে হওয়া অনান্য রোগ যেমন, জ্বর , সর্দি, কাশি থেকেও প্রতিরোধ করে এ ফল।
ত্বকের স্বাস্থ ভালো রাখে: ভিটামিন সি’ এর ভান্ডার হলো লটকন। যার কারনে ত্বকের স্বাস্থ ভালো রাখতে লটকন গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। যারা ত্বকের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত তারা এ ফল খাদ্য তালিকায় বেছে নিতে পারেন।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে: লটকনের মধ্যে চিনির মাত্রা একেবারেই সামান্য পরিমাণে রয়েছে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে থাকে এবং ডায়াবেটিস রোগিরাও এ ফল নিশ্চিন্তে খেতে পারে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়: লটকন শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তাই যারা ওজন নিয়ে চিন্তিত তারা লটকন ফল নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখুন।
এ ছিল লটকনের উপকারিতা। তবে লটকনের উপকারিতা এগুলোতেই সীমাবদ্ধ নয়। এ ফলের আরও অনেক স্বাস্থ উপকারিতা রয়েছে। তাই স্বাস্থকে বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচাতে বেছে নিন এ ফল।
লটকন ফলের অপকারিতা
লটকনের উপকারিতা অনেক তা আমরা পূর্বেই জেনে গেছি। তবে ফল যতই উপকারি হোক না কেন সব ফলের কিছু অপকারিতা রয়েছে, লটকনও এর ব্যতিক্রম নয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে লটকন না খেলে শরীরে বেশ কিছু অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। তো চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক লটকন ফলের অপকারিতা সম্পর্কে।
পেটের সমস্যা: পর্যাপ্ত পরিমাণে লটকন না খেলে পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন-গ্যাস, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া ইত্যাদি হয়ে থাকে।
কিডনীর জন্য ক্ষতিকর: লটকনের মধ্যে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি রয়েছে। যার কারনে অতিরিক্ত লটকন খেলে কিডনী ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এছারাও কিডনী রোগিদের এ ফল সাবধানতার সাথে খাওয়া উচিত। তবে পরিমিত খেলে তাতে কোনো সমস্যা নেয়।
এলার্জি: অতিরিক্ত লটকন খেলে কারও ক্ষেত্রে এলার্জির সৃষ্টি হতে পারে।
ক্ষুধামন্দা: লটকন ফলে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। যার কারনে অতিরিক্ত এ ফল খেলে পেট অনেক্ষন ধরে ভরা থাকে, ফলে অন্য খাবারের প্রতি চাহিদা কমে যায়।
দাঁতের ক্ষতি: লটকনে সামান্য চিনির মাত্রা থাকলেও যদি অতিরিক্ত লটকন খাওয়া যায় তাহলে দাঁতের ক্ষতি হয়।
এ ছিল লটকনের অপকারিতা। তবে লটকন খুবই উপকারি একটি ফল। তাই এ ফল পরিমিত খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
লটকন কিভাবে খায়
বর্ষার সিজনের অন্যতম একটি ফল হলো লটকন। আকারে ছোট এ ফলের অনেক ধরনের স্বাস্থ উপকারিতা রয়েছে। তাই এ ফল স্বাস্থ সুরক্ষায় খাওয়া উচিত। টক মিষ্টি স্বাদের এ ফলটি কিভাবে খাওয়া যায় অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক লটকন কিভাবে খায়।
লটকন একটি ফল, তাই এটি অনান্য ফলের মতোই সরাসরি খাওয়া যায়। এ ফল সরাসরি খেলে এ ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন সি’ সহজেই আমাদের শরীরে ভিটামিন সি’ এর চাহিদা পূরন করবে। দৈনিক দুটি করে লটকন খেলেই শরীরে ভিটামিন সি’ এর চাহিদা পূরন হয়ে যায়। তবে অনেকেই সরাসরি লটকন খেতে পচ্ছন্দ করেন না। সেক্ষেত্রে তারা এ ফলের জ্যাম তৈরি করে খেতে পারেন। এভাবে খেলেও, এ ফলের পুষ্টি উপকারিতা আপনি পাবেন।
এছারাও যারা লটকনের মজাদার স্বাদ পেতে চান তারা লটকন ফলের ভর্তা বানিয়েও খেতে পারেন। এজন্য পাকা দেখে লটকন ফল নিন। ফলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে, এরপর এ ফলের খোসা ছাড়িয়ে নিন। খোসা ছাড়ানো হয়ে গেলে একটি পাত্রে শুকনো কাঁচা মরিচের সাথে বিট লবন নিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিন। এরপর খোসা ছাড়ানো লটকনগুলোর সাথে মরিচ ও বিট লবনের মিশ্রনটি একসাথে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এভাবে তৈরি করে নিন লটকন ভর্তা।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা
অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ একটি ফল হলো লটকন। লটকনের মধ্যে ভিটামিন সি’, ভিটামিন বি-১, ভিটামিন বি-২, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্রোমিয়ামসহ আরও বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ সুরক্ষার জন্য আমাদের প্রয়োজন। তবে পুষ্টিসমৃদ্ধ এ ফল গর্ভাবস্থার জন্য কতটা উপকারি এবং কি কি উপকার জানেন কি। তো চলুন জেনে নিন গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে: গর্ভবস্থায় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়। একজন গর্ভবতী মায়ের সেদিকে বিষেভাবে নজর দিতে হবে। আর সেজন্য খেতে হবে সঠিক খাবার। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে গর্ভবতী মায়ের সঠিক একটি খাবার হলো লটকন। লটকন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: একজন সুস্থ মানুষের তুলনায় গর্ভাবস্থায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। আর এ সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো যায় সঠিক খাবারের মাধ্যমে। লটকন ফলের মধ্যে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে থাকে।
আয়রনের চাহিদা পূরন করে: একজন স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় গর্ভাবস্থায় আয়রনের চাহিদা অনেক বেশি হয়ে থাকে। এ সময় অনেক বেশি পরিমাণে আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলো খাওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর লটকন ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। যার কারনে গর্ভাবস্থায় এ ফল খেলে আয়রনের চাহিদা পূরন হয়।
বমি বমি ভাব কমায়: টক মিষ্টি স্বাদের লটকন ফলটি গর্ভাবস্থায়, গর্ভবতী মায়েদের বমি বমি ভাব দূর করে। ফলে খাবারে অনেকটাই রুচি আসে।
শারিরিক দুর্বলতা কমায়: গর্ভাবস্থার সময়ে অনেক মায়েরা দুর্বলতা অনুভব করে। এজন্য বেছে নিতে পারেন এ ফল। গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খেলে শারিরিক দুর্বলত অনেকটাই কমে আসে।
হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি ঘটে: লটকন ফল থেকে ক্যালসিয়াম ও আয়রন পাওয়া যায়। যা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের হাড়ের স্বাস্থকে ভালো রাখে এবং গর্ভের শিশুর হাড়ের সঠিক বিকাশ হয়।
পানির চাহিদা পূরন হয়: গর্ভাবস্থার সময়ে সকল গর্ভবতী মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকা জরুরি। এতে মা ও শিশু দুজনেই সুস্থ থাকে। আর দেশীয় এ ফলটিতে প্রচুর পানি রয়েছে। যার কারনে লটকন খেলে পানির চাহিদা পূরন হয়।
এ ছিল গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়ার উপকারিতা। তবে গর্ভাবস্থায় যেকোনো ফল খাদ্য তালিকায় রাখার আগে অবশ্যই সচেতন থাকা জরুরি।
গর্ভাবস্থায় লটকন খাওয়া যাকে কি
গর্ভাবস্থার সময়টা একটি মেয়ের জন্য খুবই আনন্দের। তার সাথে এ সময়টা সতর্কতার। যখন একজন মেয়ে গর্ভধারন করে তখন থেকে তার নিজের ও গর্ভের শিশুর দিকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। আর যে দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া জরুরি তা হলো খাদ্যাভ্যাস। গর্ভাবস্থায় অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন সঠিক খাবার। এজন্য সব খাবার খাওয়ার আগে সে খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।
দেশীয় ফলগুলো সকল গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ সুরক্ষায় অনেক প্রয়োজন তা আমরা জানি। দেশীয় ফলগুলোর তালিকায় কমন একটি ফল হলো লটকন। এ ফলটি গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে কি না এ নিয়ে অনেকেই বিভ্রান্তিতে পড়ে যায়। তাই নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিন গর্ভাবস্থায় লটকান খাওয়া যাবে কি না।
লটকন ফলের পুষ্টি উপাদানগুলো গর্ভবতী মায়েদের জন্য প্রয়োজন। এ ফল গর্ভবতী মায়ের বিভিন্ন উপকারে আসে। যেমন-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ভিটামিন সি’এর চাহিদা পূরন হয়, হাড়ের স্বাস্থ ভালো থাকে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখে, পানি শূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে, বমি বমি ভাব কমায়, খাবারে রুচি আসে ইত্যাদি। এসব ছাড়াও লটকন ফল একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরন করে থাকে। তাই গর্ভাবস্থায় লটকন ফল খাওয়া যাবে।
তবে মনে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লটকন খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। এছারাও গর্ভাবস্থার সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ন একটি সময়। এ সময় সকল গর্ভবতী মায়ের শারিরিক অবস্থা একই হয় না। তাই লটকন খাওয়ার আগে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
পুরুষ লটকন গাছ চেনার উপায়
পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল লটকন। বাংলাদেশে এসকসময় এ গাছের কোনো গুরুত্ব ছিল না। কিন্তু বর্তমানে এ ফলের চাহিদা অনেক বেড়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ফল গাছের চাষ করা হচ্ছে। গাছের গোড়া থেকে ডালপালা জুড়ে এ গাছে ফল আসে। তবে সঠিক চারা না কিনে থাকলে ভালোভাবে গাছে ফল আসে না। তাই লটকন চাষ করতে এ গাছ প্রথমে ভালোভাবে চিনে নিতে হবে।
লটকন ফলের গাছ দুই ধরনের হয়ে থাকে। পুরুষ গাছ ও স্ত্রী গাছ। স্ত্রী লটকন গাছে ফল বেশি পরিমাণে আসে এবং পুরুষ লটকন গাছে ফল আসে না। তাই লটকন চাষে বেশি লাভবান হতে হলে পুরুষ লটকন গাছ চিনে নিতে হবে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক পুরুষ লটকন গাছ চেনার উপায় সম্পর্কে।
পুরুষ লটকন গাছ: পুরুষ লটকন গাছে ফুল আসলেও এ গাছে ফল আসে না। পুরুষ লটকন গাছের ফুলের দানাগুলো অনেক ছোট আকৃতির হয়ে থাকে এবং ফুলের ডোগা ছোট হয়ে থাকে। ফুলগুলো ডালের অগ্রভাগে অর্থ্যাৎ পাতার শেষের দিকে আসে। পুরুষ গাছগুলোর ফুলের মধ্যে কোনো ধরনের পুষ্পমঞ্জুরী বা ফলের গুটি থাকে না। এ গাছের ফুলগুলো অল্প সময়ের মধ্যে হলুদ হয়ে যায় এবং ঝড়ে যায়।
স্ত্রী লটকন গাছ: স্ত্রী লটকন গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল আসে। এ গাছ চেনার উপায় হলো- স্ত্রী লটকন গাছের ফুলের যে ডোগা থাকে সেটা লম্বা হয়ে থাকে। স্ত্রী গাছগুলোর গোড়া থেকে গাছ ফেটে মুকূল বের হয়। এ গাছগুলোর ফুলগুলো আকারে বড় হয়ে থাকে। এ ফুলগুলোর মধ্যে পুষ্পমঞ্জরি থাকে অর্থ্যাৎ ক্ষুদ্র আকারে ফলের গুটি দেখতে পাওয়া যায়।
তাই লটকন চাষে লাভবান হতে হলে আপনাকে ফুলসহ লটকন গাছগুলো কিনে নিতে হবে। এছারাও বর্তমান সময়ে ফলসহ চারা কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। তাই চেষ্টা করবেন ফলসহ চারাগুলো কিনার। এভাবে একটু সতর্কতার সাথে চারা কিনলে সহজেই পেয়ে যাবেন স্ত্রী লটকন গাছের চারা।