আপনার কি রাতে সঠিকভাবে ঘুম হয় না?? ঘুম মানব শরীরের জন্য খুবই উপকারী যদি সঠিকভাবে রাতে ঘুম না হয় তাহলে আপনাকে জানতে হবে যে রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম কি, রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার এবং কি খেলে রাতে ঘুম আসে না সেই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ ডিপারেশন কিংবা শরীরে ভিটামিন এর ঘাটতি থাকলে রাতে সঠিকভাবে ঘুম হয় না। কি করলে রাতের ঘুম আসবে সেই সকল বিষয় নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে চলুন দেখে আসি রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম।
আপনার কি রাতে ঘুম আসে না ? একজন ব্যক্তির সুস্থ থাকার জন্য অন্যতম নিয়ামত হল ঘুম একজন প্রাপ্ত বয়স্ক স্বাভাবিক মানুষ প্রতিদিনের প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকে যদি দিনে ছয় ঘন্টার কম ঘুমায় তাহলে কোন ক্ষতি হবে না কিন্তু যদি ছয় ঘন্টা এরকম ঘুমায় তাহলে এটি স্বাস্থ্যের উপর হানিকারক প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বাধীনতা প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের শরীরে দিনের সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমায় প্রয়োজন থাকে। যদি কোনো কারণে সঠিকভাবে রাতে ঘুম না হয় তাহলে অনেক মাথা ব্যথা থাকে দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস তৈরি হয় সারাদিন ঝিমঝিম ভাব থাকে কাজে মনোযোগ বসন্ত আমি যাচ্ছি খিটখিটে হয়ে থাকে এবং মাথায় চাপ চাপ অনুভূত হয়। তাই সঠিকভাবে ঘুম হওয়া খুবই জরুরী বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ঘুমের হার কমে যায় এই ঘুমের হার কেন কমে যাচ্ছে সে সকল বিষয়গুলো আপনাদেরকে জানতে হবে।
যদি আপনি আপনার ঘুমের সমস্যা কি দূর করতে চান তাহলে প্রথমে জেনে দিন কোন কারণে আপনার ঘুম আসছে?? ঘুম না আসা পিছনে শুধুমাত্র একটি কারণ নয় বরং একাধিক কারণ থাকতে পারে সে কারণগুলো আজকের এই আর্টিকেলে আমরা দেখব।
রাতে ঘুম আসে না কেন
অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন যে রাতে সঠিকভাবে ঘুম হয় না কেন রাতে ঘুম আসে না কেন?? রাতে ঘুম না আসার পেটে শুধুমাত্র একটি কারো নয় বরং একাধিক কারণ রয়েছে যেমন আপনার অতিরিক্ত মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করা ,নিয়মিত ঘুমের সময় নির্ধারিত না থাকা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, হরমোন সমস্যা, হরমোন ভারসামহীনতা ,অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা।
উপরের এই কারণগুলোর জন্য রাতে আসে না। আপনারা অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন এবং এই মোবাইল ফোনের স্ক্রিন দীর্ঘ সময় পর্যন্ত দেখেন যার কারণে আপনার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশাপাশি আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে ফোন রেখে দিতে হবে এবং ঘুমানোর চেষ্টা করতে হবে তাহলে দ্রুত ঘুম চলে আসবে।
ঘুমানোর আগে একটি আম অথবা এক গ্লাস দুধ খেয়ে নিতে পারেন আম এবং দুধ খেলে ঘুম অনেক ভালো হয় যারা অনিদ্রায় ভুগছেন তারা নিয়মিত ঘুমানোর আগে আম অথবা দুধ যেকোন মিষ্টান্ন খাবার খেয়ে নিন এতে দ্রুত ঘুম চলে আসবে। আর যতটা সম্ভব মানসিক চাপ মুক্ত থাকতে হবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়
যদি শরীরে ভিটামিনের অভাব থাকে তাহলে ঘুম কম হতে পারে যেমন ভিটামিন ডি। যদি আপনার শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে ঘুমের সমস্যা তৈরি হতে পারে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি শরীরে সারকার্ডিয়ান রিদম ব্যাহত করে যার ফলে ঘুমের সমস্যা তৈরি হয়।
ঘুমের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত ভিটামিন ডি ক্যাপসুল সেবন করতে হবে অথবা প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত সূর্যের রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে এতে আপনি ভিটামিন ডি সংগ্রহ করতে পারবেন সূর্যের আলো থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি ১২ মস্তিষ্কের নারকে ঠিক রাখে যদি শরীরে ভিটামিন বি ১২ এর অভাব দেখা দেয় তাহলে ঘুম সঠিকভাবে হয় না অথবা শরীরে যদি ভিটামিন ডি এর অভাব তৈরি হয় তাহলে অবসাদ দুশ্চিন্তা এবং অনিদ্রার সমস্যা বেড়েই চলে। দীর্ঘদিন থেকে ঘুমের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
কি খেলে রাতে ঘুম আসে না
এমন অনেক খাবার রয়েছে যে খাবারগুলো গ্রহণ করলে রাতে সঠিকভাবে ঘুম আসে না। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন যে কি খেলে রাতে ঘুম আসে না?? যেমন ক্যাপিং যুক্ত খাবার খেলে ঘুম আসে না যুক্ত খাবার হলেও চা কফি ইত্যাদি যদি ঘুমানোর আগে অতিরিক্ত চা কিংবা কফি খাওয়া হয় তাহলে ঘুম আসে না।
আবার সফট ড্রিংক কিংবা এনার্জির ড্রিঙ্ক খেলেও রাতে সঠিকভাবে ঘুম আসে না। অতিরিক্ত চকলেট খেলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে আপনারা অনেকেই চকলেট খেতে খুব ভালোবাসেন কিন্তু অতিরিক্ত চকলেট হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটি ঘুমের সমস্যা তৈরি করে।
অতিরিক্ত নুডুলস পিজ্জা কিংবা ফাস্টফুড খেলে ঘুমের সমস্যা তৈরি হয় যেমন চিকেন ফ্রাই ফ্রেন্স ফ্রাই কাবাব অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার ইত্যাদি। এ ধরনের খাবারগুলো খাওয়ার ফলে ঘুমের সমস্যা তৈরি হয় স্বাভাবিক এছাড়াও ফাস্টফুড খেলে পেটে চর্বি জমে এবং ওজন বাড়তে শুরু করে।
তাই এ ধরনের খাবারগুলো খাওয়া বাদ দিতে হবে তাহলে আশা করছি আপনার ঘুমের সমস্যা সেরে যাবে। অনেকেই রাতে খাবারের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ খেতে ভালোবাসেন কিন্তু এই কাঁচা পেঁয়াজ নিয়মিত খাওয়ার ফলে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত করতে পারে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন কি খাবার খেলে ঘুম আসে না।
রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম
রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম হচ্ছে ইনসমনিয়া এটি হলো একটি জটিল ঘুম জনিত রোগ। আপনারা অনেকেই এই রাতে ঘুম না আসার সমস্যা নিয়ে অনেক কমেন্ট করেন রাতে ঘুম না আসলে সারাদিন শরীর অনেক বেশি ক্লান্ত থাকে এবং মাথা ঝিমঝিম করে আর কোন কাজে মনোযোগ বসেনা
অতএব প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সঠিকভাবে ঘুম হওয়া খুবই জরুরী আর যদি ঘুম সঠিকভাবে না হয় তাহলে একটি ভালো অভিজ্ঞ চিকিৎসা করে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে চিকিৎসকদের ভাষায় রাতে যদি সঠিকভাবে ঘুম না হয় কিংবা যদি ঘুম না আসে
তাহলে এই সমস্যাকে বলা হয় ইনসমনিয়া। রাতে ঘুমের মাঝে মাঝে যদি ঘুম ভেঙে যায় তাহলে এটি ইনস মনিয়া এর লক্ষণ। ইনস্মনিয়া দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি স্বল্প মেয়াদী আর একটি দীর্ঘমেয়াদী যদি স্বল্প মেয়াদী ইউনসমনিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনার ঘুম সঠিকভাবে হবে না।
আর যদি আপনি আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মাসের পর মাস এই সমস্যা স্থায়ীভাবে থেকে যাবে। অর্থাৎ মাসের পর মাস আপনার সঠিকভাবে ঘুম হবে না এবং আপনার শরীর ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকবে। আপনি যদি এমন মারাত্মক রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আসুন আমরা দেখে নেই রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার
রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার
রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা প্রত্যেকের জন্য খুবই জরুরী বিশেষ করে যারা রাতে ঘুম নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত রয়েছেন এবং রাতে সঠিকভাবে ঘুম আসে না। যদি আপনার রাতে সঠিকভাবে ঘুম না আসে তাহলে নিচে দেখে নিন রাতে ঘুম না আসার কারণ গুলো এবং প্রতিকারগুলো পয়েন্ট আকারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
রাতে ঘুম না আসার কারণ
- অতিরিক্ত চা কিংবা কফি পান করা
- অতিরিক্ত ধূমপান করা কিংবা মাদকাসক্ত।
- অতিরিক্ত মসলাদার খাবার গ্রহণ করা।
- অতিরিক্ত বাইরের ফাস্টফুড খাওয়া।
- বেশি বেশি সফট ড্রিংক কিংবা এনার্জি ড্রিংক খাওয়া।
- অতিরিক্ত ফ্রেঞ্চ ফ্রাই চিকেন ফ্রাই কিংবা পিজ্জা খাওয়া।
- অতিরিক্ত তেল এবং চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া।
- অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়া।
- অতিরিক্ত দুধ কলা খাওয়া
রাতে ঘুম না আসার প্রতিকার
রাতে ঘুম না আসা হলো একটি সাধারণ সমস্যা। এই সমস্যা দূর করতে আপনাকে সঠিক জীবন যাপন করতে হবে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে হবে এবং প্রতিদিন ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ল্যাপটপ বা পিসি ব্যবহার করা বাদ দিয়ে দিতে হবে। যদি রাতে ঘুম না আসে তাহলে আপনাকে নিচের এই উপায় গুলো অনুসরণ করে চলতে হবে আসুন আমরা দেখে নেই রাতে ঘুম না আসার প্রতিকার সমূহ।
- প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। প্রতিদিন ঘুমানোর একটি সময় নির্ধারণ করুন যেমন আপনি প্রতিদিন রাত এগারোটা এর মধ্যে ঘুমিয়ে পড়বেন এভাবে সময় নির্ধারণ করে ঘুমাতে হবে।
- ঘুমানোর ৩০ মিনিট আগে ব্যায়াম করুন কিংবা অল্প হাঁটাচলা করুন এতে ঘুম অনেক ভালো হবে।
- যদি রাতে ঘুম না আসে তাহলে ঘুমানোর আগে আপনার ঘর পরিষ্কার করে নিন এবং গুছিয়ে নিন। অপরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ঘরে সঠিকভাবে ঘুম আসে না তাই প্রথমেই ঘরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
- রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধ পান করুন এতে ঘুম অনেক আরাম দেওয়া হবে।
- রাতে ঘুমানোর আগে ঘাড় অথবা পা একটু ম্যাসাজ করে নিন এতে আপনার ঘুম দ্রুত আসবে।
- রাতে ঘুমানোর আগে টিভি দেখা কিংবা মিউজিক শোনা যাবে না এটিই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
- ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না।
- ঘুমানোর এক ঘন্টা আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে।
- বিছানায় শুয়ে শুয়ে ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত উল্টা ভাবে গুনতে হবে এতে ঘুম দ্রুত আসবে।
- ঘুমানোর সময় মনকে শান্ত রাখতে হবে।
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলতে হবে তাহলে দ্রুত ঘুম আসবে।
- বিছানায় শুয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা যাবে না।
- ঘুমানোর সময় একটি ঠান্ডা ও অন্ধকার রুম বেছে নিতে হবে তাহলে দ্রুত ঘুম আসবে।
ওপরের এই উপায় গুলো অনুসরণ করলে আশা করছি দ্রুত আপনাদের ঘুম আসবে যারা ঘুমের সমস্যায় রয়েছেন তারা এই উপায় গুলো অনুসরণ করুন তাহলে অনিদ্রার সমস্যা কেটে যাবে। এখন বেশিরভাগ মানুষই এই সমস্যায় ভুগছে, সঠিকভাবে রাতে ঘুম আসে না এর কারণ হলো আমাদের বদ অভ্যাস।
ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে হবে না কিন্তু আমরা অনেকেই এখন ঘুমানোর আগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করি মোবাইলে গান শুনে ফেসবুক ব্যবহার করি যার ফলে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তাই ঘুমানোর আগে এই সমস্ত কার্যকলাপ গুলো বাদ দিতে হবে।
আমাদের শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেল আলোচনা করা হলো কি খেলে রাতে ঘুম আসে না কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয় রাতে ঘুম আসে না কেন রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম এবং রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার গুলো। যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন তারা উপরের এই পোস্টটি দেখে নিন তাহলে ঘুমের সমস্যা আশা করছি দূর হবে।